Halloween party ideas 2015

প্রত্যেকেই বিভিন্ন কারণে নানান সময়ে দুশ্চিন্তা করে থাকেন। ঘরে কাজ থেকে শুরু করে, অফিসে কাজের ডেডলাইন, ভালোবাসার সম্পর্ক কিংবা ব্যংক ব্যালেন্স- সবকিছু নিয়েই মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে নানান রকম দুশ্চিন্তা এবং চিন্তাভাবনা।


তবে, এই দুশ্চিন্তা করাটা খুব নিয়মিত হয়ে গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপর। দেখা যায় এক সময় এটি অনেক বড় একটি মানসিক সমস্যায় রূপ নিয়ে নেয়। তবে স্বাভাবিকভাবে চলার জন্যে সকল মানসিক দুশ্চিন্তাগুলোর সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েই চলতে হবে।

যে কোন সাধারণ মানুষ তো বটেই, যারা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তারা নিজেরাও হাজারো চিন্তাভাবনা এবং দুশ্চিন্তার মাঝে সময় পার করেন। তারাও কিন্তু হিসাবের বাইরে নন! মনোবিজ্ঞানীরা কীভাবে তাদের দুশ্চিন্তাগুলোর সাথে নিজেদের বর্তমান সময়কে খাপ খাইয়ে নেন এবং খুব স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করে থাকেন তার নয়টি উপায় শেয়ার করেছেন সেন্টার ফর এংজাইটি এন্ড বিহেবিয়ার থেরাপি’র কো ফাউন্ডার স্টিভেন ডি. সাও এবং বস্টন ইউনিভার্সিটির এসোসিয়েট প্রফেসর টড ফ্রাচিনো।

১/ দুশ্চিন্তাকে খুবই সাধারণভাবে গ্রহণ করুন
সেন্টার ফর এংজাইটি এন্ড বিহেভিয়ার থেরাপি’র কো ফাউন্ডার স্টিভেন ডি. সাও বলেন, যখন আমরা কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা মাঝে থাকি তখন নিজেকে বারবার প্রবোধ দিলেও আক্ষরিক অর্থে দুশ্চিন্তা একেবারেই কমে না। তবে এতে করে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায় এবং দুশ্চিন্তাকে খুব সহজভাবে গ্রহণ করা যায়। তাই নিজেকে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নিজেই বলতে পারেন নানান রকম প্রবোধ বাক্য। যেমন- ‘কোন সমস্যা নেই, কিচ্ছু হবে না, এই সমস্যা কোন ব্যাপারই না অথবা, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে!

২/ ঘুমানোর সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাকুন
রাতে ঘুমাতে যাবার সময়ে মোবাইল ফোনটাকে বন্ধ করে একপাশে রেখে দিন। এই সময়টাতে প্রয়োজনীয় কোন মেইল কিংবা ফেসবুকের কোন কমেন্ট চেক করার প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয় অনেকখানি। তাই যতোটা সম্ভব সেগুলো থেকে দূরে সরে থাকতে হবে। যদি রাতে একেবারেই ঘুম না আসে তবে কোন গল্পের বই পড়া যেতে পারে।

৩/ দুশ্চিন্তাকে একটি দৃশ্যপটের সামনে দাঁড় করান
ভবিষ্যৎ এ ঘটতে চলেছে এমন কোনকিছু নিয়েই সাধারণত দুশ্চিন্তার উদ্রেক হয়ে থাকে। তাই যেই ব্যাপারটি নিয়ে দুশ্চিন্তা কাজ করবে, সেটার একটা সম্ভাব্য চিত্র নিজের মনের মাঝে তৈরি করে নিতে হবে এবং কী কী ঘটতে পারে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। সম্ভাব্য ঘটনায় ভয় পাওয়ার অংশটাকে যতটা সম্ভব ভালোভাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে হবে যেন, সেই সমস্যা কীভাবে সমাধান করলে নিজের জন্যে ভালো হবে সেটা বের করা যায়।

দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখতে চাইলে অথবা দুশ্চিন্তাকে সাথে নিয়েই সুন্দরভাবে পথ চলতে চাইলে নিজের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলোর দিকে খেয়াল দিতে হবে এবং প্রয়োজনে সেগুলো তৈরি করে নিতে হবে। স্টিভেন ডি. সাও বলেন, তিনি নিজে যখন কোন কারণে খুব বেশী দুশ্চিন্তার মাঝে থাকেন তখন তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করেন- ‘আমি কি ভালোমতো ঘুমাচ্ছি?’ ‘আমি কি পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছি?’ ‘আমি কি নিয়মিত ব্যায়াম করছি?’ নিজের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো দুশ্চিন্তার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশী সাহায্য করে থাকে বলে, স্বাস্থ্যকর এই অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা প্রয়োজন।

৫/ যে কারণে দুশ্চিন্তা করছেন তার বিপরীত চিত্রটি ভাবুন
যে কারণে আপনার মাঝে দুশ্চিন্তা তৈরি হচ্ছে, তার ঠিক বিপরীত চিত্রটি ভাবার চেষ্টা করুন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়: ধরে নিন আপনি একজন লেখক। যে সময়ের মাঝে আপনার প্রকাশককে পাঁচটি চ্যাপ্টার দেওয়ার কথা ছিল, সেই সময়ের মাঝে আপনি হয়ত চারটি চ্যাপ্টার দিতে পারবেন। এখন আপনি এই লেখা নিয়ে হয়তো দুশ্চিন্তা করতে শুরু করবেন- প্রকাশক অনেক রাগ করবেন কী না, প্রকাশক লেখা প্রকাশ করা নিয়ে কোন সমস্যা করবেন কী না ইত্যাদি। কিন্তু, আপনি চাইলে এর বিপরীত চিত্রটি নিয়েও ভাবতে পারেন। আপনার সমস্যার কথা বুঝিয়ে বললে প্রকাশক হয়তো আপনাকে আরো কিছুদিন সময় দিতে পারে অথবা, চারটি চ্যাপ্টার প্রকাশ করে দিতে পারে। তাই ইতিবাচক ভাবে প্রতিটি ঘটনাকে ভাবতে শিখতে হবে।

৬/ নিজে নিজেই গান করুন
রাতের ঘুমাতে যাওয়ার পর যদি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে ঘুমাতে না পারেন অথবা, রাতের ঘুম হুট করে ভেঙে যাওয়ার পর নানান রকম চিন্তার কারণে আর ঘুমাতে যা পারেন তবে নিজের পছন্দের কোন গান গাওয়া শুরু করে দিন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এই কাজটি নার্ভের উপরে চাপ পড়া কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।

৭/ দুশ্চিন্তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শিখুন
যতোই বলা হোক না কেন ‘দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করুন’, প্রকৃত অর্থে কখনোই দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। চারপাশের নানান রকম কাজের ব্যস্ততা, নানান রকম পঘটনা কোন না কোনভাবে আমাদের মাঝে দুশ্চিন্তার উদ্রেক করেই থাকে। তাই, সকলের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ, নিজেদের দুশ্চিন্তাগুলো কে সাথে নিয়ে কীভাবে সহজ স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করা যায়!
ডা. শিনেরার বলেন, ‘আমি সবসময় ভাবি, আমার এই মুহুর্তে সমস্যা নিয়ে আমি কি করতে পারি’। সমস্যা নিয়ে বেশিমাত্রায় দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লে সমাধান বের করা সহজ হবে না। এর চেয়ে যদি সমস্যার সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে পারেন তবে সমস্যার সমাধান পেয়ে যাওয়াটা সহজ হয়ে যায়।

৮/ লম্বা করে শ্বাস নিতে হবে
অনেক সময় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ার ফলে মস্তিস্কে অক্সিজেন এর ঘাটতি দেখা দেয়। সে কারণে, অনেকগুলো চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা যখন খুব বেশি মনের মধ্যে সমস্যা তৈরি করতে শুরু করবে, তখন কিছুটা সময় নিয়ে লম্বা করে শ্বাস নেওয়া এবং শ্বাস ছাড়ার অভ্যাস করতে হবে। যেকোন কঠিন সময়ে অথবা সমস্যাযুক্ত অবস্থায় পড়লে এমনভাবে লম্বা করে শ্বাস নিলে মানসিকভাবে অনেকটা শান্তি পাওয়া যায়।

৯/ সবশেষে থেরাপি নিতে হবে
দিনশেষে সবকিছুর সমাধান একা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। নিজের মানসিক দুশ্চিন্তার সাথে পেরে উঠতে না পারলে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞর শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ তারা জানেন কীভাবে গাইড করলে মানসিক অশান্তি, অস্থিরতা এবং দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনা যাবে।

Post a Comment

Related Post

[random][carousel2][#e74c3c]
{picture#YOUR_PROFILE_PICTURE_URL} YOUR_PROFILE_DESCRIPTION {facebook#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL} {twitter#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL} {google#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL} {pinterest#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL} {youtube#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL} {instagram#YOUR_SOCIAL_PROFILE_URL}
Powered by Blogger.